Dharma Ksetre Kuru Ksetre Haiya #
Krsna Kirtana Songs est. 2001 www.kksongs.org
Home ⇒ Song Lyrics ⇒ D
Song Name: Dharma Ksetre Kuru Ksetre Haiya
Official Name: Chapter 1
Author: A.C. Bhaktivedanta Swami Prabhupada
Book Name: Gitar Gan
Language: Bengali
LYRICS:
(১)
ধর্ম-ক্ষেত্রে কুরু-ক্ষেত্রে হৈয়া একত্র
যুদ্ধকামী মমপুত্র পাণ্ডব সর্বত্র
কি করিল তরপর কহত সঞ্জয়
ধৃতরাষ্ট্র জিজ্ঞাসয়ে সন্ধিগ্ধ হৃদয়
(২)
সঞ্জয় কহিলেন:
রাজা শুন মন দিয়া
পাণ্ডবের সৈন্য-সজ্জা সাজান দেখিয়া
রাজা দুর্যোধন শীঘ্র দ্রোণাচার্য পাশে
যঈয়া বৃত্তন্ত সব কহিল সকাশে
(৩)
আচার্য চাহিযা দেখ মহতী সেনানী
পাণ্ডু-পুত্র রচিযাছে ব্যুহ নানা-স্থানী
তব শিষ্য বুদ্ধিমান দ্রুপদের পুত্র
সাজাইল এই সব করি একসুত্র
(৪-৫-৬)
এই স্থানে বর্তমান বহু যোদ্ধাগণ
ভীমার্জুন-সম তা’র ধনুর্ধারী হন
যুযুধান বিরাট দ্রুপদ মহারথী সব
ধৃষ্টকেতু চেকিতান কাশীর পুঙ্গব
পুরুজিত কুন্তিভোজ সৈব্য-রাজা-গণ
যুধামন্যু বিক্রান্ত নহে সাধারণ
বীর্যবান যে এই সৌভদ্র দ্রৌপদেয়
সকলেই মহারথী কেহ নহে হেয়
(৭)
আমাদের মধ্যে যারা বিশিষ্ট মহান
দ্বিজোত্তম শুন তাহা করিয়া মনন
সেনাপতি যে যে সব মম সৈন্য-পাশে
সংজ্ঞার্থে তোমারে কহি অশেষ বিশেষে
(৮)
আপনি আর পিতামহ ভীষ্মাদি-গণ
কৃপাচার্য রণজয়ী হয় একত্রে বর্ণন
অশ্বত্থামা বিকর্ণাদি সৌমদত্তি আর
যথা-যথা তথা তথা সৈন্য সে অপার
(৯)
আর যে অনেক বীর আমার লাগিয়া
আসিয়াছে হেথা সব জীবন ত্যজিয়া
নানা-অস্ত্রপাণি সব যুদ্ধে বিশারদ
এরা সব হয় মোর যুদ্ধের সংসদ
(১০)
অপর্যাপ্ত মম সৈন্য ভীষ্ম সেনাপতি
পর্যাপ্ত ওদের সৈন্য ভীম যার গতি
(১১)
যথা-স্থানে স্থিত থাকি আপনি সকলে
রক্ষ ভীষ্ম পিতামহে হেন যুদ্ধ-স্থলে
(১২)
তবে সেই পিতামহ বৃদ্ধ কুরুপতি
হর্ষ উত্পাদনে যবে কৈল স্থির-মতি
সিংহ-নাদে বাজাইল সঙ্খ সেই বীর
উচ্চ-রব সেই সব অতীব গম্ভীর
(১৩)
শুনি সেই সত্রু-রব যত সঙ্খ ভেরি
গোমুখ পনবানক বাজিল সত্বরি
সহসা উঠিল সেই রণের ঝঙ্কার
তুমুল হইল সব্দ বহুল অপার
(১৪)
তার্পর স্বেত অশ্ব রথেতে বসিয়া
অসিল যে মহা-যুদ্ধে নিযুক্ত হৈয়া
মাধব আর পণ্ডব দিব্য সঙ্খ ধরি
বাজাইল পরে পরে অপুর্ব মাধুরী
(১৫)
হৃষীকেশ ভগবান্ পঞ্চজন্য-রবে
ধনঞ্জয বাজাইল দেবদত্ত সবে
ভীমকর্মা ভীমসেন বাজাইল পরে
পৌণ্ড্র-নাম সঙ্খ সেই অতি উচ্চৈঃ-স্বরে
(১৬-১৮)
যুধিষ্ঠির ধরে সঙ্খ রাজা কুন্তিপুত্র
অনন্ত-বিজয সেই ঘোষণা সর্বত্র
নকুল বাজাল সঙ্খ সুঘোষ তার নাম
সহদেব বাজাল মণি-পুষ্পক নাম
তারপর একে একে যত মহা-রথী
ধনুর্ধর কাশীরাজ শিখণ্ডী সারথী
ধৃষ্টদ্যুম্ন বিরাটাদি বীর সে সাত্যকি
মহ-যোদ্ধ পারে যারা যুঝিতে একাকী
দ্রুপদ আর দ্রৌপদেয় পৃথিবীপতে
সৌভদ্র বাজাল সঙ্খ যার যার মতে
(১৯)
সে সব্দ ভাঙ্গিল বুক ধার্ত-রাষ্ট্রগণে
আকাশ ভেদিল পৃথ্বী কাঁপিল সঘনে
(২০)
কপি-ধ্বজ দেখি ধার্ত-রাষ্ট্রের গণেরে
যুদ্ধের সজ্জায় সেথা মিলিল অচিরে
নিজ অস্ত্র ধনুর্বাণ যথস্থানে ধরি
যুদ্ধের লাগিযা সেথা স্মরিল শ্রীহরি
(২১-২২)
মহীপতে! পাণ্ডুপুত্র কহে হৃষীকেশে
উভয় সেনার মাঝে রথের প্রবেশে
যাবত দেখিব এই যুদ্ধ-কামিগণে
তাবত রাখিবে রথ অচ্যুত এখানে
দেখিবারে চাহি কেবা আসিয়াছে হেথা
কাহার সহিত হবে যুঝিবারে সেথা
(২৩)
যুদ্ধকামীগণে আজ নিরখিব আমি
দুর্বুদ্ধি ধার্ত-রাষ্ট্রের জন্য যুদ্ধকামী
(২৪)
সে কথা শুনিয়া হৃষীকেশ ভগবান্
উভয় সেনার দিকে হইল আগুয়ান
উভয় সেনার মধ্যে রাখি রথোত্তম
কহিতে লাগিল কৃষ্ণ হইয সম্ভ্রম
(২৫)
দেখ পার্থ সমবেত ধার্ত-রাষ্ট্রগণ
ভীষ্ম দ্রোণ প্রমুখত যত যোদ্ধগণ
(২৬)
তারপর দেখে পার্থ যোদ্ধৃ-পিতৃগণ
আচার্য মাতুল আদি পিতৃসম হন
দেখে পুত্র পৌত্রাদিক যত সখাজন
আর সব বহু লোক আত্মীয়-স্বজন
শ্বশুরাদি কুটুম্বীয় নাহি পারাপার
উভয়-পক্ষিয় সৈন্য সে হল অপার
(২৭)
তাদের দেখিল পার্থ সবই বান্ধব
কাঁপিল হৃদয় তার বিষণ্ণ বৈভব
কৃপাতে কাঁদিল মন অতি দয়াবান
বিষণ্ণ হইয়া বলে সুন ভগবান্
(২৮)
অর্জুন কহয়ে কৃষ্ণ এরা যে স্বজন
রণাঙ্গণে আসিয়াছে করিবারে রণ
দেখিয়া আমার গাত্রে হয়েছে রোমাঞ্চ
মুখ-মধ্যে রস নাই এ যে মহাবঞ্চ
(২৯)
কাঁপিছে শরীর মোর সহিতে না পারি
গাণ্ডিব খসিয়া যায় কি করিয়া ধরি
জ্বলিয়া উঠিছে ত্বক মহা-তাপ বাণ
হইও না হইও না বন্ধু আর আগুয়ান
(৩০)
অস্থির হয়েছি আমি স্থির নহে মন
সব ভূল হয়ে যায় কি করি এখন
বিপরীত অর্থ দেখি শুনহ কেশব
এ যুদ্ধে কাজ নাহি হল পণ্ড সব
(৩১)
কোন হিত নাহি হেথা স্বজন-সম?হারে
যুদ্ধে মোর কাজ নাই ফিরাও আমারে
হে কৃষ্ণ! বিজয মোর নাহি সে অকাঙ্ক্ষা
রাজ্য আর সুখ শান্তি সবই আশঙ্কা
(৩২)
যাদের লাগিয়া চাহি সুখ-ভোগ শান্তি
তরাই এসেছে হেথা দিতে সে অশান্তি
ধন প্রাণ সব ত্যজি মরিবার তরে
সবাই এসেছে হেথা কে জীয়ে কে মরে
(৩৩)
এসেছে আচার্য পূজ্য পিতার সমান
সঙ্গে আছে পিতামহ আর পুত্রগণ
মাতুল শ্বশুর পৌত্র কত যে কহিব
শালা আর সম্বন্ধি সবাই মরিব
(৩৪)
আমি মরি ক্ষতি নাই এরা যদি মরে
এদের মরিতে শক্তি নাহি দেখিবারে
ত্রিভুবন রাজ্য যদি পাইব জিনিয়া
তথাপি না লৈ তাহা এদের মরিয়া
(৩৫)
ধার্ত-রাষ্ট্রগণে মারি কিবা প্রীতি হবে
জনার্দন তুমি কৃষ্ণ আপনি কহিবে
(৩৬)
এদের মারিলে মাত্র পাপ লাভ হবে
এমন বিপক্ষ শত্রু কে দেখেছে কবে
এই ধার্তরাষ্ট্র-গণ স-বান্ধব হয়
উচিত না হয় কার্য তাহাদের ক্ষয়
স্বজন মারিয়া বল কেবা কবে সুখী
সুখ-লেশ নাহি মাত্র হব শুধু দুঃখী
(৩৭)
যদ্যপি এরা নাহি দেখে লোভীজন
কুল-ক্ষয় মিত্র-দ্রোহ সব অলক্ষন
এসব পাপের রাশি কে বহিতে পারে
বুঝিবে তুমি ত সব বুঝাবে আমারে
(৩৮)
উচিত কি নহে এই পাপে নিবৃত্তি
বুঝা কি উচিত নহে সেই কৃপ্রবৃত্তি
কুলক্ষয়ে যেই দোষ জান জনার্দন
অতএব এই যুদ্ধ কর নিবারণ
(৩৯)
কুল-ক্ষয়ে কলুষিত সনাতন ধর্ম
ধর্ম-নষ্টে প্রাদুর্ভাবে হইবে অধর্ম
(৪০)
অধর্মের প্রাদুর্ভাবে কুল-নারীগণ
পতিতা হইবে সব কর অণ্বেষণ
(৪১)
দুষ্টা স্ত্রী হইলে জন্মে বর্ণ-সঙ্কর দল
বর্ণ-সঙ্কর হলে হবে নরকের ফল
যেই সে কারণ হয় বর্ণ-সঙ্করের
কুলক্ষয় কুলঘ্নানি যেই অপরের
(৪২)
নরকে পতন হয় লুপ্ত পিণ্ড জন্য
তরিবার নাহি কোন উপায় যে অন্য
কুল ধর্মের নষ্ট-কারী বর্ণ-সঙ্কর ফলে
শাশ্বত জাতি ধর্ম উত্সাদিত হলে
(৪৩)
নরকে নিয়ত বাস সে মনুষ্যের হয
তুমি জান জনার্দন সে সব বিষয
আমি সুনিয়াছি তাই সাধু-সন্ত মুখে
নরকের পথে চলি কে রহিবে সুখে
(৪৪)
হয় হয় মহাপাপ করিতে উদ্যত
হয়েছি আমরা শুধু হয়ে কলুষিত
রাজ্যের লোভেতে পড়ে এ দুষ্কার্য করি
স্বজন হনন এই উচিত কি হরি?
(৪৫)
যদি ধার্ত-রাষ্ট্র-গণ আমাকে মারিয়া
এই রণে রাজ্য লয় অশস্ত্র বুঝিয়া
সেও ভাল মনে করি যুদ্ধ সে অপেক্ষা
বিনা-যুদ্ধে সেই আমি করিব প্রতীক্ষা
(৪৬)
একথা বলিয়া পার্থ নিশ্চল বসিল
রথোপস্থ যুদ্ধ মধ্যে অস্ত্র সে ত্যজিল
শোকেতে উদ্বিগ্নমনা অর্জুন সদয়
বিষাদ-যোগ নাম এই গিতার বিসয়
(৪৭)
ভক্তিবেদান্ত কহে শ্রী-গিতার গান
সুনে যদি সুদ্ধ ভক্ত কৃষ্ণগত-প্রাণ
UPDATED: February 3, 2017