Ami Ati Dinamati #
Krsna Kirtana Songs est. 2001 www.kksongs.org
Home ⇒ Song Lyrics ⇒ A
Song Name: Ami Ati Dinamati
Official Name: Karpanya Panjika or Vijnapti Nivedana
Author: Bhaktivinoda Thakura
Book Name: Gitamala
Language: Bengali
(১)
আমি অতি দিন-মতি ব্রজ-কুঞ্জে নিবসতি
রাধা-কৃষ্ণ-জুগল-চরণে
কাঁদিয়া কাঁদিয়া অজ ছাড়ি’ সব লোক লজ
নিবেদিব জত আছে মনে
(২)
তুমি কৃষ্ণ নীলমণি নব-মেঘ-প্রভা জিনি’
ব্রজানন্দ কর বিতরণ
তুমি রাধে নব-গৌরী গোরোচনা-গর্ব হরি’
ব্রজে হর কৃষ্ণচন্দ্র-মন
(৩)
তুমি কৃষ্ণ পীতাম্বরে পরাজিয়া আর্তশ্বরে
ব্রজ-বনে নিত্য-কেলি-রত
তুমি রাধে নীলাম্বরী পলাশের গর্ব হরি’
কৃষ্ণ-কেলি-সহায় সতত
(৪)
তুমি কৃষ্ণ হরিন্মণি জুবা-বৃন্দ-শিরোমণি
রাধিকা তোমার প্রাণেশ্বরী
ব্রজঙ্গণ-সিরঃ-শোভা ধম্মিল-মল্লিকা-প্রভা
তুমি রাধে কৃষ্ণ-প্রিয়াঙ্করী
(৫)
রমা-পতি-শোভা জিনি’ কৃষ্ণ তব রূপ-খানি
জগত মাতায় ব্রজ-বনে
রমা জিনি’ ব্রজাঙ্গনা- গণ-মধ্য়ে সু-শোভন
তুমি রাধে কৃষ্ণ-চিত্তাঙ্গনে
(৬)
তরঙ্গ-সৌরভ-কণ বংশী-গীত অনুক্ষণ
ওহে কৃষ্ণ রাধা-মন হরে
রাধে অঙ্গ-গন্ধ তব তোমার সু-বিনা-রব
কৃষ্ণ-চিত্ত উন্মাদিত করে
(৭)
তোমার চপলেক্ষণহরে রাধা-ধৈর্য়-ধন
তুমি কৃষ্ণ চোর-শিরোমণি
বঙ্ক দৃষ্টি-ভঙ্গি তবশ্রী-কৃষ্ণ-হৃদয়াসব
তুমি রাধে কলাবতী ধনী
(৮)
পরিহাসে রাধিকারকথা নাহি সরে যার
তুমি কৃষ্ণ নট-কুল-গুরু
কৃষ্ণ নর্ম-উক্তি শুনি’ রোমঞ্চিত তনু-খনি
তব রাধে রস-কল্প-তরু
(৯)
অপ্রাকৃত-গুণ-মণি-বিনির্মিত-গিরি-শ্রেণি
তুমি কৃষ্ণ সর্ব-গুণ-ময়
উমাদি রমণী-জনবাঞ্ছনীয় গুণ-গণ
রাধে তব স্বভাবিক হয়
(১০)
আমি অতি মন্দ-মতি করি হে কাকুতি নতি
নিখপটে এ প্রার্থন করি
বৃন্দাবন-অধীশ্বর তুমি কৃষ্ণ প্রাণেশ্বর
তুমি রাধে ব্রজ-বনেশ্বরী
(১১)
তোমাদের কৃপা পাইএ-রূপ যোগ্যতা নাই
যদি আমার ব্রজ-বনে
দুঁহে মম কৃপা-ময় জানি’ কৈনু পদাশ্রয়
কৃপা কর এ অধম জনে
(১২)
কেবল অযোগ্য নহিঅপরাধী আমি হৈ
তথাপি করহ কৃপা দান
লোকে কৃপাবিষ্ট জন ক্ষমে অপরাধ-গণ
তুমি দুঁহে মহা-কৃপাবান
(১৩)
কৃপা-হেতু ভক্তি-সার লেশাভাস নাহি তা’র
কৃপা-অধিকারী নাহি আমি
দুঁহে মহা-লীলেশ্বর হন সেই লীলাপর
কৃপা কর ব্রজ-জন-স্বামী
(১৪)
সু-দুষ্ট অভক্ত জনে সিবাদি দেবত-গণে
প্রসন্ন হৈল কৃপা করি’
মহা-লীলা সর্বেশ্বর দুঁহু মম প্রাণেশ্বর
দয়া কর দোষ পরিহরি’
(১৫)
অধমে উত্তম মণি মূঢ বিজ্ঞ অভিমানী
দুষ্ট হন সিষ্ট-অভিমান
এই দোষে দোষি হন গেল চির-দিন বন
না করিনু ভজন-বিধান
(১৬)
তথাপি এ দীন-জনে যদি নাম-উচ্চরণে
নামাভাসে করিল জীবনে
সর্ব-দোষ-নিবরণ দুঁহু নাম-সঞ্জল্পন
প্রসাদে প্রসীদ দুই জনে
(১৭)
ভক্তি-লব-মাত্রে খোয়সর্ব-অপরাধা হয়
ক্ষম-শীল দুঁহের কৃপায়
এ আশা মনে ধরি’ চরণে প্রার্থন করি’
শোধ দোষ ক্ষমিয়া অমায়
(১৮)
সাধন-সম্পত্তি-হীন ওহে এ জীব দীন
অতি-কষ্টে ধৃষ্টতর ছার
দুঁহু পদ-নিপতিত প্রার্থন করয়ে হিত
প্রসন্নতা হৌক দোঁহার
(১৯)
দন্তে তৃণ ধরি’ হায় কাঁদিতেছে উভরায়
এ পাপী কম্পিত শরীর
হ নাথ হ নাথ বলি’হ’য়ে অজি কৃতাঞ্জলি
প্রসাদ অর্পিয়া কর স্থির
(২০)
এ দুর্ভগ হ হ স্বরে প্রসাদ প্রার্থনা করে
অনুতাপে গডাগডি যায়
হে রাধে হে কৃষ্ণচন্দ্রশুন মম কাকু-বাদ
তুঁহু কৃপা বিনা প্রাণ যায়
(২১)
ফুত্কার করিয়া কান্দে আহা আহা কাকু-নাদে
বলে হও প্রসন্ন অমায়
এই তো’ অযোগ্য় জনেকৃপা কর নিজ-গুণে
করুণ-সাগর রাখো পায়
(২২)
মুখেতে অঙ্গুষ্ঠ দিয়া উচ্চৈঃস্বরে আর্ত হন
কাঁদিতে কাঁদিতে বলে নাথ
করুণ-কণিকা-দানেরাখ কর মোর প্রাণে
কর এই দিনে আত্ম-শাঠ
(২৩)
এ তব মূঢ-জন দীন-বাক্যে সু-ক্রন্দন
প্রার্থনা করয়ে দৃঢ-মনে
হে করুণা-সুনিধান অনুগতি কর দান
করুণর্মি-চ্ছটা ব্রজ-বনে
(২৪)
ভাব চিত্ত-সুখকর জত আছে সু-মধুর
প্রকটাপ্রকট লীলা-স্থানে
রাধা-কৃষ্ণ-প্রেম-সার সকলের সারাত সার
সেই ভাব যেনি কৃপা-বলে
(২৫)
যদি এ দাসীর প্রতি প্রসন্ন করুণা-মতি
দুঁহু পদ-সেবা কর দান
আর কিছু নাহি চাইজুগল-চরণ পাই
শীতল হৌক মোর প্রাণ
(২৬)
অনাথ-বত্সল তুমি অধম অনাথ আমি
ত্বদীয় সাক্ষাত-দাস্য মাগি
এ প্রসাদ কর দান রাখো অনাথেরপ্রাণ
ছাড়ি’ সব তব দাস্য মাগি
(২৭)
শিরেতে অঞ্জলি ধরি’ ও-পদে বিজপ্তি করি
আমার অভীষ্ট নিবেদন
এক-বার দাস্য দিয়া শীতল কর হে হিয়া
তবে মানি সার্থাক জীবন
(২৮)
কবে দুঁহে এই বনেবিলোকিব সম্মিলনে
অমূল্যাঙ্গ-পরিমল-ঘ্রাণ
আমার নাসিকা-দ্বরেপ্রবেশিয়া চিত্ত-পুরে
অচৈতন্য করিবে বিধান
(২৯)
দুঁহার নূপুর-ধ্বনি হংস-কণ্ঠ-স্বর জিনি’
মধুর মধুর মম কানে
প্রবেশিয়া কোন ক্ষণে মম চিত্ত-সুরঞ্জনে
মাতাইবে সেবা-রস-পানে
(৩০)
চক্রাদি সৌভাগ্যাস্পদ বিলখিত দুঁহু পদ
চিহ্ন এই বৃন্দাবন-বনে
দেখিয়া এ দাসী কবে ভাসিবে আনন্দোত্সবে
দুঁহু কৃপা পেয়ে সঙ্গোপনে
(৩১)
সকল-সৌন্দর্জাস্পদ নীরাজিত দুঁহু পদ
হে রাধে হে নন্দের নন্দন
মমাখি-গোচরে কবে সর্বাদ্ভুত-মহোত্সবে
করিবে আনন্দ-বিতরণ
(৩২)
প্রচীনাশা ফল-পূর্তি তুঁহু পদাম্ভুজ-স্ফূর্তি
সেই দুঁহু জন-দরশন
এ জন্মে কি হবে মম এ উত্কণ্ঠা সু-বিষম
বিচলিত করে মম মন
(৩৩)
কবে আমি বৃন্দাবন- কুঞ্জান্তরে দরশন
করিব সুন্দর দুঁহু জনে
সুরত-লীলায় রতআমা হৈতে অদূরত
প্রেমে মগ্ন হ’ব দরশনে
(৩৪)
ঘটনাবশতঃ কবে দুঁহু যোগ অসম্ভবে
পরস্পর সন্দেশ আনিয়া
বাড়াইব দুঁহু সুখ জবে তবে মনো-দুঃখ
বাড়াইব আনন্দে মাতিয়া
(৩৫)
কবে এই বৃন্দাবনে দুঁহু দুঁহ অদর্শনে
ফিরে জ’ব দুঁহে অন্বেষিয়া
সম্মিলন করাইব হর-পদকাদি পা’ব
পরিতুষ্ট দুঁহারে করিয়া
(৩৬)
দুঁহে হার ধরি’ পণে দ্যূত-ক্রীডা সমাপনে
আমি জয়ী আমি জয়ী বলি’
করিবে কলহ তবেহর-সঙ্গ্রহেতে কবে
আমি তাহা দেখিব সকলি
(৩৭)
আহা কবে দুই জনে কুঞ্জ-মাঝে সু-সয়নে
কুসুম-শয়্যায় বিরামিবে
সে সময়ে দুঁহু পদ সম্বহন-সুসম্পদ
এ দাসীর সৌভাগ্য মিলিবে
(৩৮)
কন্দর্প-কলহোদ্গারে ছিণ্ডিবে কণ্ঠের হারে
লতা-গৃহে পড়িবে খাসিয়া
সে হার গান্থিতে কবে এ দাসী নিজুক্ত হ’বে
দুঁহু কৃপা-আজ্ঞা শিরে পাঞা
(৩৯)
কেলি-কল্লোলের জবে দুঁহু কেস স্রস্ত হবে
দুই-জনর ইঙ্গিত পাইয়া
শিখি-পিঞ্ছ করে ধরি’ কুন্তল-মধিত করি’
আমি রব আনন্দে ডুবিয়া
(৪০)
কন্দর্প-ক্রীডায় জবে দুঁহু স্রক স্রস্ত হ’বে
তবে আমি দুঁহু আজ্ঞা পাঞা
উভয় ললাট-মাঝে করিব তিলক-সাজে
মত্ত হ’বে সে শোভা দেখিয়া
(৪১)
কৃষ্ণ তব বখে আমি বন-মল দিয়া স্বামী
রাধে তব নয়নে কজ্জল
কুঞ্জ-মাঝে কোন দিন পা’ব সুখ সমীচীন
প্রেমে চিত্ত হ’বে টলমল
(৪২)
কবে জাম্বুনদ-বর্ণ লৈয়া তাম্বূল-পর্ণ
শিরা শূন্য কর্পূরাদি-জুত
বীটিক নির্মাণ করি’ দুঁহু মুখে দিব ধরি’
প্রেমে চিত্ত হ’বে পরিপ্লুত
(৪৩)
কোথা এ দুরাশা মোর কোথা এ দুষ্কর্ম ঘোর
এ প্রার্থনা যদি বল ক্যানো
হে রাধে হে ঘন-শ্যামদুঁহু জন-গুণ-গ্রাম
মাধুরী বলায় মোরে হেন
(৪৪)
দুঁহার জে কৃপা-গুণে পাইনু ধাম-বৃন্দাবনে
সে কৃপা অভীষ্ট-পূরণ
করুণ আমায় নাথপাঞা তুনু সখী-সাঠ
কুঞ্জ-সেবা পাই অনুক্ষণ
(৪৫)
ওহে রাধে ওহে কৃষ্ণ সেই ব্রজ-রস-তৃষ্ণ
কার্পণ্য-পঞ্জিকা-কথা-ছলে
জল্পন করয়ে সদা তা’র বাঞ্ছা-পূর্তি তদা
করুন দুঁহু কৃপা-বলে
(৪৬)
শ্রী-রূপ-মঞ্জরী-পদ শিরে ধরি’ সু-সম্পদ
কমল-মঞ্জরী করে আশা
শ্রী-গোদ্রুম-ব্রজ-বনে দুঁহু লীলা-সন্দর্শনে
পূর্ণ হও রসের পিপাসা
UPDATED: July 17, 2016